বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিধর হ্যামার দিয়ে পদ্মা সেতু নির্মাণ

ডেস্ক নিউজ ॥ পৃথিবীর গভীরতম পাইলের সেতু পদ্মা। এই নদীর তলদেশে নরম মাটি ও গ্রোতের তোড়ে সরে যাওয়ার মতো মাটির পরিমাণ বেশি। এই ধরণের নরম মাটির উপর এতো এতো ভারী একটি কাঠামোকে দৃঢ়ভাবে দাঁড় করানো ছিলো প্রকৌশলীদের কাছে বড় একটি চ্যালেঞ্জ। পদ্মা সেতুর বিশালাকৃতির পিলারের পাইলিং করতে ব্যবহার করা হয়েছে বিশ্বের সর্বোচ্চ শক্তিধর হ্যামার।
এ সেতুর পাইল হচ্ছে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় পাইল। যার দৈর্ঘ্য ১২২ থেকে ১২৫ মিটার। এটার লোড টেস্ট করার মতো যন্ত্র পৃথিবীতে নেই। আর এটা করাতে প্রায় ৯-১০ মাসে করা হয়েছে তিন ভাগে। পদ্মা সেতুর তলদেশে মাটি সরে যাওয়ার মতো মাটি থাকায় জটিল করেছে নির্মাণ কাজ। পদ্মা সেতু প্রকল্পের (মূল সেতু) নির্বাহী পরিচালক দেওয়ান মোহাম্মদ আব্দুল কাদের বলেন, পদ্মা সেতুর যে পাইলটি সবচেয়ে গভীরে গিয়েছে তার দৈর্ঘ্য ৪০০ মিটার। একেকটা পাইল যে গভীরে গেছে সে হিসেবে বলা যায়, ৪০ তলা ভবনের সমান। মাটি সরে যাওয়ায় পাইলের কোনো লোড নিতে পারেনি ৬২ মিটার গভীর পর্যন্ত।
পদ্মা সেতুর কাজের জন্য মোট চারটি হাইড্রোলিক হ্যামার (হাতুরি) ব্যবহার করা হয়। অন্য তিনটি হ্যামার ছিল এক হাজার, ২ হাজার ও ২ হাজার ৪০০ কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন। এর মধ্যে এক হাজার কিলোজুল ক্ষমতার হ্যামারটি শুধু প্লাটফর্ম তৈরিতে ব্যবহৃত হয়েছে। বাকি দুটি হ্যামার দিয়ে মূল পাইলিংয়ের কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। কাজের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় দুই পারে একসঙ্গে পাইলিং করতে সমস্যা দেখা দেয়। তাই ২০১৭ সালে জুন মাসে ৩ হাজার কিলোজুল ক্ষমতাসম্পন্ন হ্যামারটি আনা হয়েছিল বলে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানান। পদ্মা সেতু প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী (মূল সেতু) দেওয়ান আবদুল কাদের বলেন, ‘নেদারল্যান্ডস থেকে হ্যামারটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামার ছিল। ২০১৭ সালে গত ২৭ এপ্রিল নেদারল্যান্ডসে পোর্ট অব রটারড্যাম থেকে রওনা দিয়ে ৩৯ দিন শেষে মাওয়ায় আনা হয়েছিল হ্যামারটি। পদ্মা সেতুর নির্মাণস্থলে জাহাজে করে ডেনমার্ক থেকে নিয়ে আসা হয়েছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী হ্যামারটি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *